নানা জল্পনা-কল্পনার পর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের চারটি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটিতে প্রাথমিক পর্যায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর মধ্যে রূপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, আড়াইহাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং সদর ও বন্দর থানা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপিতে সদ্য যোগদানকারী শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ঘোষণা করা হয়।
তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে এখনও দলীয় কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। এই আসনটি জোটের প্রার্থীকে ছাড় দেয়ার কথা প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমী হবেন বিএনপির জোটের প্রার্থী।
এদিকে, চারটি আসনে প্রাথমিক ভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর তালিকায় উঠে আসা প্রার্থীদের অনুসারীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বইতে শুরু করেছে। কর্মীদের অনেকেই আনন্দ মিছিল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
তবে, তালিকায় নাম না আসা অন্যান্য হেভিওয়েট প্রার্থীদের কোনো কোনো শিবিরে হতাশা দেখা দিলেও অনেকে এখনো হাল ছাড়ছেন না। কেননা, প্রাথমিক পর্যায়ে ঘোষিত এই সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। শেষ পর্যায়ে এসে যেকোনো আসনেই ঘোষিত এই সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় পরিবর্তন হতে পারে। তাই আশা হত হলেও এখনো হাল ছাড়ছেন না অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা ও তাদের অনুসারীরা।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ভাবে ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নাম না আসা মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে রয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শরীফ আহমেদ টুটুল।
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে প্রাথমিক তালিকায় নাম না আসা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে প্রাথমিক তালিকায় নাম আসা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম, জেলা বিএনপি আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ এবং যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রাথমিক তালিকায় জায়গা হয়নি সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ সহ আরও একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর।
অন্যদিকে, অঘোষিত থাকা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি জোটের প্রার্থীকে ছাড় দেয়া হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এই আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী দেয়ার জোড়ালো আওয়াজ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূলে।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আসনটির সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহ-আলম, বর্তমান জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান ও সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দ।
